তোমরা যারা আগের পাঠটি মন দিয়ে পড়েছ তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছ শিক্ষায় যেসব বিষয় সবচেয়ে সাহায্য করতে পারে তার মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেট শুধু যে সরাসরি শিক্ষার ব্যাপারে সাহায্য করে তা নয়- স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেন ঠিকমতো কাজ করতে পারে সেখানেও পরোক্ষভাবে শিক্ষার কাজে সাহায্য করে।
যেমন তোমরা সবাই জানো পরীক্ষার ফলাফলগুলো আজকাল তোমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে মুহূর্তের মধ্যে
শিক্ষক ডট কম (http://shikkhok.com) ওয়েবসাইটে অনেক শিক্ষক নানা বিষয়ে কোর্স পড়িয়ে থাকেন
জানতে পার। কিছুদিন আগেও যেটি ছিল অনেক কঠিন। গ্রামে বা প্রত্যন্ত এলাকায় যারা ছিল পরীক্ষার ফলাফল জানার জন্য তাদের অনেক পথ পাড়ি দিয়ে শহরে আসতে হতো- আজকাল মোবাইল টেলিফোনের একটি মেসেজ বা ইন্টারনেটে এক ক্লিকেই পরীক্ষার ফলাফল জেনে নেওয়া যায়।
পরীক্ষার ফলাফল জানার ব্যাপারে ইন্টারনেট যেরকম অনেক বড় ভূমিকা রাখে- স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারেও ইন্টারনেট অনেক ভূমিকা রাখতে পারে। তোমরা মোবাইল টেলিফোন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি রেজিস্ট্রেশনের কথা শুনেছ- ঠিক সেরকম ইন্টারনেট ব্যবহার করেও লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া হয়। আমাদের দেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় চার লক্ষ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দেয়- তোমরা কি জানো এই চার লক্ষ পরীক্ষার্থী সবাই ভর্তির জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে?
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনকারী প্রায় চার লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রক্রিয়া করা হয়েছিল
একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার আগে সবাই সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে একটু তথ্য জানতে চায়। আগে সেই তথ্য জানার জন্য একজন মানুষকে অনেক দূর থেকে সেখানে আসতে হতো- এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তথ্য একজন ঘরে বসে জেনে নিতে পারে।
প্রযুক্তির কারণে ইতোমধ্যে আমরা অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করছি- কিছুদিনের ভেতরে আমাদের দেশেই আমরা আরও নানা ধরনের নতুন নতুন সুযোগ পেতে যাচ্ছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভার্চুয়াল ক্লাসরুম তৈরি হতে যাচ্ছে যেটি সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত হবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক যখন পড়াবেন তখন সেটি শুধু তার ক্লাসরুমে আসা অল্প কয়জন ছাত্রছাত্রী তার সামনে বসে সেটি শুনবে না- ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে বসে হয়তো সারা দেশের অনেক ছাত্রছাত্রী সেটা শুনবে।
মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা অনেক দূর থেকে হয়তো একটা জটিল অপারেশন নিজের চোখে দেখতে পারবে। দূর পাহাড়ের উপর বসানো একটা টেলিস্কোপের ভেতর দিয়ে একজন শিক্ষার্থী সৌরজগতের কোনো গ্রহ বা দূর গ্যালাক্সির কোনো নক্ষত্রকে পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। অনেক আধুনিক একটা ল্যাবরেটরির কোনো একটা এক্সপেরিমেন্ট একটা ছাত্র তার ঘরে বসে করে ফেলতে পারবে। স্কুল লাইব্রেরিতে যে বইটি নেই মুহূর্তের মধ্যে সেই বইটিও একজন শিক্ষার্থী পড়ার জন্য নিয়ে আসতে পারবে।
সবকিছু দেখে-শুনে মনে হয় যখন ইন্টারনেট ছিল না তখন মানুষ কেমন করে লেখাপড়া করত?
দলগত কাজ আজ থেকে একশ বছর পরে শিক্ষার ব্যাপারে তথ্য প্রযুক্তি কী ভূমিকা রাখতে পারে সেটি কল্পনা করে একটি দেয়াল পত্রিকা বের করো। |
common.read_more